বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০

খাদ্য ব্যবস্থাপনা তদারকি হবে অ্যাপে


প্রকাশন তারিখ : 2020-09-20

নিত্যপণ্যে

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে সিন্ডিকেটের কারসাজি বন্ধে তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতা নিচ্ছে সরকার। এ জন্য ইতোমধ্যে ‘কৃষকের অ্যাপ’ নামে একটি অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। এ অ্যাপের মাধ্যমে ধান, চাল, পেঁয়াজসহ দেশে উৎপাদিত সব ধরনের খাদ্যপণ্যের ব্যবস্থাপনা তদারকি করা হবে। একই সঙ্গে এর মাধ্যমে কৃষক তাদের উৎপাদিত পণ্য সরকারের কাছে বিক্রি করতে পারবেন। ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে পেয়ে যাবেন টাকা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।


সূত্র জানায়, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের আওতায় বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডিজিটাল আর্কিটেকচার (বিএনডিএ) অনুসরণ করে এ অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের আওতাধীন সাইবার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (সার্ট) তৈরি করেছে। এটি তৈরি করতে খাদ্যপণ্য ব্যবস্থাপনা সিস্টেমসের মডেল অনুসরণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে দুই বছর ধরে খাদ্য অধিদফতর কৃষকের কাছ থেকে ধান চাল সংগ্রহে অ্যাপটি ব্যবহার করছে। শতভাগ সফলতার সঙ্গে তারা এটি ব্যবহার করেছে। এর ধারাবাহিকতায় এবার একই অ্যাপের মাধ্যমে বোরো ধান সংগ্রহ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এর মাধ্যমে অন্যসব কৃষিপণ্য সংগ্রহ করা হবে। পাশাপাশি এর মাধ্যমে সারা দেশে বিভিন্ন পণ্যের আবাদ, উৎপাদন, মজুদ, সরবরাহব্যবস্থা তদারকি করা যাবে। সরকারের কাছে ধান চাল বিক্রির জন্য ২৪টি উপজেলায় দুই লাখ ২৯ হাজার কৃষক ও ৪৬টি অটোরাইস মিল নিবন্ধিত হয়েছে। চলতি মৌসুমে ৬০টি জেলার ৬০টি উপজেলার কৃষকদের কাছ থেকে ধান চাল কেনার ক্ষেত্রে অ্যাপটি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) পরিচালক ও সার্টের প্রকল্প পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহ বলেন, আঙুলের ছোঁয়ায় সরকারি সেবা দেশের সব মানুষের মধ্যে পৌঁছে দেয়ার একটি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে কৃষকরা যাতে আঙুলের ছোঁয়ায় সেবাটি পেতে পারেন সেজন্য এ উদ্যোগ। প্রাথমিকভাবে এটিকে কৃষককের কাছ থেকে ধান চাল সংগ্রহ করার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। পরে এটিকে অন্যসব খাতেও ব্যবহার করা হবে। তিনি আরও বলেন, এটি ব্যবহার করে কৃষক ঘরে বসে সরকারের কাছে ধান বিক্রয়ের আবেদন করতে পারবেন। আবেদনটি কোন পর্যায়ে রয়েছে সেটিও জানা যাবে। ধান হস্তান্তর করার পর টাকাও চলে যাবে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে কৃষক ধাপে ধাপে মোবাইল ফোনে বার্তা পাবে। এ ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ব্যাংক হিসাব খুলতে হবে ও কৃষকের অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে। এজন্য কৃষককে স্থানীয় কৃষি অফিসারের কাছে আবেদন করতে হবে। তিনি আবেদনটি অনুমোদন করলে নিবন্ধন হয়ে যাবে। অ্যাপটি জাতীয় ই-সেবার সঙ্গে সংযুক্ত। ফলে নিবন্ধনের সময় সংশ্লিষ্ট কৃষকের জাতীয় পরিচয়পত্র নির্বাচন কমিশন থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বা অনলাইনে যাচাই হয়ে নিবন্ধন চূড়ান্ত হবে। অর্থাৎ নিবন্ধন করতে শুধু কৃষকের জাতীয় পরিচয়পত্র ও একটি স্মার্ট মোবাইল ফোন সেট লাগবে।

বিসিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, কোন এলাকায় কি পরিমাণ পণ্য উৎপাদন হয়েছে, কি পরিমাণ মজুদ আছে, কতটুকু সরবরাহ হয়েছে, চাহিদা কেমন ইত্যাদি সব তথ্য জানা যাবে। এটি হবে খাদ্যপণ্যের একটি সবচেয়ে বড় ডাটাবেজ। এর বোতাম টিপে খুব সহজে কোনো এলাকায় কোন পণ্যের কী পরিমাণ চাহিদা আছে, সরবরাহ ও মজুদ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানা যাবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোনো কারণে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হলে সে তথ্যও জানা যাবে।

সূত্র জানায়, যেসব পণ্য আমদানি করা হয় সেগুলোর চাহিদা, আমদানি, সরবরাহ, মজুদ, দেশে-বিদেশে পণ্যটির মূল্য পরিস্থিতি তদারকি করতে এ অ্যাপের মাধ্যমে করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে সার্ট কাজ করছে। এসব বিষয়ে তথ্যের জোগান দিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, কৃষি বিপণন অধিদফতরকেও এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।